top of page

ইসলামী আন্দোলন সাফল্যের শর্তাবলী - সাইয়্যেদ আবুল আ'লা মওদূদী 

প্রকাশকের কথা:


১. এই পৃথিবীর বুকে মানুষের কোন উদ্দেশ্য, আন্দোলন, সংষ্কামূলক কোন পদক্ষেপ সফল হতে হলে সে আন্দোলনের কর্মীদের মধ্যে সে আন্দোলনের বিশেষ গুণগুলো দেখা যায়।
২. সমস্যা সঙ্কুল এই দুনিয়ায় ইসলামী সমাজ-প্রতিষ্ঠার সংগ্রামে অবতীর্ণ হওয়া ছাড়া আখেরাতে আল্লাহর সন্তুষ্টি পাওয়ার উত্তম পথ নেই।
৩. এ আন্দোলন তার কর্মীদের কাছে আশা করে অধিক কর্মপ্রেরণা, ত্যাগ আর কুরবাণী। দাবী করে বিশেষ যোগ্যতা ও বৈশিষ্টের।


ভুমিকা:


* সমস্যা:

১. জাতির মধ্যে ইসলাম প্রতিষ্ঠার জন্য আকাঙ্খিত লোকের অভাব নেই। অভাব হলো আগ্রহ ও উদ্যোগের, তার চেয়ে বেশী অভাব যোগ্যতার।
২. জাতি সমগ্র প্রভাবশালী অংশ সমাজে বিকৃতি ও ভাঙ্গণ সৃষ্টিতে মুখর। আর যারা সমাজে বিকৃতি ও ভাঙ্গণের কাজে লিপ্ত নেই তারাও সৃষ্টি বিন্যাসের চিন্তামুক্ত।
৩. বর্তমান যুগে সমাজ জীবন পরিগঠন ও ভাঙ্গার বৃহত্তম শক্তি হচ্ছে সরকার।


* সম্ভাবনা:

১. জাতি সামগ্রিকভাবে অসৎ প্রবন নয়।
২. বিচক্ষনতার সাথে সুসংঘবদ্ধ প্রচেষ্ঠা চালালে জনমত একদিন সত্যের পথে আসবেই।
৩. বিকৃতির কাজে লিপ্ত বাতিলের দুইটি গুরুত্বপূর্ণ শক্তির অভাব। এক- চারিত্রিক শক্তি, দুই- ঐক্যের শক্তি।


শিক্ষনীয়:


১. দ্বীন প্রতিষ্ঠার কাজ আল্লাহর কাজ । এ জন্য শর্ত হল ধৈর্য্য, আন্তরিকতা এবং বুদ্ধি বিচক্ষনতা দিয়ে সামনে আগানো।
২. আল্লাহর প্রদত্ত নীতির অনুসরন।
৩. সাময়িক আবেগ দিয়ে নয় সুস্থ মস্তিষ্কে, সুচিন্তিত সিদ্ধান্তের মাধ্যমে একাজে আত্ননিয়োগ করতে হবে।


বইটির মূল অংশ পাঁচ ভাগে বিভক্ত:


১. ব্যক্তিগত গুণাবলী

ক. ইসলামের যথার্থ জ্ঞান।
খ. ইসলামের প্রতি অবিচল বিশ্বাস।
গ.চরিত্র ও কর্ম।
ঘ. দ্বীন হচ্ছে জীবনোদ্দেশ্য।


২. দলীয় গুণাবলী

ক.ভ্রাতৃত্ব ও ভালোবাসা।
খ.পারষ্পরিক পরামর্শ।
গ.সংগঠন ও শৃংখলা ।
ঘ.সংষ্কারের উদ্দেশ্যে সমালোচনা।


৩. পূর্ণতাদানকারী গুণাবলী।

ক. খোদার সাথে সম্পর্ক ও আন্তরিকতা।
খ.আখেরাতের চিন্তা।
গ.চরিত্র মাধুর্য।
ঘ. ধৈর্য্য।
ঙ.প্রজ্ঞা।


চরিত্র ও মাধুর্যের কতিপয় বিষয়াবলী:

১. উদার হ্রদয় ও বিপুল হিম্মত।
২. সৃষ্টির প্রতি সহানুভুতিশীল ও মানবতার দরদী।
৩. ভদ্র ও কোমল স্বভাব সম্পন্ন।
৪. আত্মনির্ভরশীল ও কষ্টসহিষ্ণু।
৫. মিষ্টভাষী ও সদালাপী।
৬. তাদের দ্বারা কোন ক্ষতির আশংকা ও কেউ করবে না বরং তাদের থেকে কল্যান কামনা করবে।
৭. নিজেদের প্রাপ্যের চেয়ে কমের উপর সন্তুষ্ট থাকবে এবং অপরকে বেশী দিতে প্রস্তুত থাকবে।
৮. মন্দের জবাব ভাল দিয়ে দেবে।
৯. নিজের দোষ-ত্রুটি স্বীকার করবে এবং অন্যের গুণাবলীর কদর করবে।
১০. অন্যের দুর্বলতার প্রতি নজর না দেয়ার মতো বিরাট হ্রদয়পটের অধিকারী হবে।
১১. অন্যের দোষ-ত্রুটি ও বাড়াবাড়ি মাফ করে দেবে এবং নিজের জন্য কারোর উপর প্রতিশোধ নেবে না।
১২. অন্যের সেবা গ্রহন করে নয় ,অন্যকে সেবা করে আনন্দিত হবে। ১৩. নিজের স্বার্থে নয় , অন্যের ভালোর জন্য কাজ করবে।
১৪. কোন প্রশংসার অপেক্ষা না করে , কোন নিন্দার তোয়াক্কা না করে নিজের দায়িত্ব পালন করবে।
১৫. খোদা ছাড়া আর কারোর পুরষ্কারের প্রতি দৃষ্টি দেবে না।
১৬. তাদেরকে বল প্রয়োগে দমন করা যাবে না।
১৭. ধন-সম্পদের বিনিময়ে ক্রয় করা যাবে না কিন্তু সত্য ও ন্যায়ের সামনে নির্দ্বিধায় ঝুকে পড়বে।
১৮. তাদের ভদ্রতা ও ন্যায়নীতির ব্যাপারে শক্রদের ও আস্থা থাকবে।


ধৈর্য্যের কতিপয় বিষয়াবলী:

১. তাড়াহুড়ো না করা , নিজের প্রচেষ্টার ত্বরিত ফল লাভের জন্য অস্থির না হওয়া এবং বিলম্ব দেখে হিম্মত না হারানো।
২. তিক্ত স্বভাব, দুর্বল মত ও সংকল্পহীনতার রোগে আক্রান্ত না হওয়া।
৩. বাধা বিপত্তির বীরোচিত মোকাবেলা করা।


প্রজ্ঞার কতিপয় বিষয়াবলী:

১. গভীর দৃষ্টি।
২. চিন্তাশক্তি।
৩. বুদ্ধি ও বিবেচনা শক্তির প্রয়োজন।
৪. পরিস্থিতি সম্পর্কে ওয়াকিফহাল।
৫. বিচার বিবেচনা ও সিদ্ধান্ত গ্রহনের ক্ষমতা রাখে এবং জীবন সমস্যা বুঝার ও সমাধানের যোগ্যতা রাখে। এসব গুণকেই এক কথায় বলা হয় প্রজ্ঞা।


৪. মৌলিক ও অসৎ গুণাবলী:

ক. গর্ব ও অহঙ্কার ।
খ. প্রদর্শনেচ্ছা গ. ত্রুটিপূর্ণ নিয়ত।


গর্ব ও অহঙ্কার থেকে বাঁচার উপায়:

১. বন্দেগীর অনুভূতি।
২. আত্মবিচার ।
৩. মহৎ ব্যক্তিদের প্রতি দৃষ্টি।


৪. দলগত প্রচেষ্টা


প্রদর্শনেচ্ছা থেকে বাঁচার উপায়:
১. ব্যক্তিগত প্রচেষ্টা।
২. সামষ্টিক প্রচেষ্টা।
৫. মানবিক দুর্বলতা
ক) আত্মপুজা।
খ) আত্মপ্রীতি।
বাঁচার উপায় : তওবা ও এস্তেগফার।
গ) হিংসা বিদ্বেষ । ঘ) কু-ধারণা। ঙ) গীবত। চ) চোগলখোরী।
ছ) কানাকানি ও ফিসফিসানী। জ) মেজাজের ভারসাম্যহীনতা।
ঝ) একগুয়েমী। ঞ) একদেশদর্শীতা। ট) সামষ্টিক ভারসাম্যহীনতা।
ঠ) সংকীর্ণমনতা।

bottom of page