top of page

হেদায়াত - সাইয়্যেদ আবুল আ'লা মওদূদী 

বই পরিচিতি: ১৯৫১ সালের ১৩ই নভেম্বর করাচিতে জামায়াতের বার্ষিক সম্মেলনের প্রদত্ত বক্তব্য।


আল্লাহ তায়ালার সাথে সম্পর্ক:

১. আকীদা-বিশ্বাসের ব্যাপারে আল্লাহর প্রতি ঈমান।
২. ইবাদাতের বেলায় আল্লাহর সাথে নিবিড়তর সম্পর্ক স্থাপন।
৩. নৈতিক চরিত্রে আল্লাহর প্রতি ভয় পোষণ এবং আচার-ব্যবহার ও লেনদেনের বেলায় আল্লাহ তায়ালার সন্তুষ্টি লাভ করাকেই প্রাধান্য দেয়া দরকার।


আল্লাহ তায়ালার সাথে সম্পর্ক স্থাপনের অর্থ:


১. নিজ জীবনের সকল কিছু একমাত্র আল্লাহর জন্য।
২. সকল কাজে একমাত্র আল্লাহকে ভয় করা।
৩. বন্ধুত্ব, শত্রুতা, লেনদেন শুধু তার সন্তুষ্টির জন্য।
৪. সকল অবস্থায় শুধু তার উপর ভরসা করা।
৫. নিজের চলার পথকে শুধু আল্লাহর নির্দেশিত সীমায় রাখা।


আল্লাহ তায়ালার সাথে সম্পর্ক বৃদ্ধির উপায়: ২টি


১. চিন্তা ও গবেষনা:
ক) নিয়মিত কোরআন,হাদীস ও ইসলামী সাহিত্য অধ্যয়ন ও এবং সম্পর্কের ধারনা লাভ।
খ) সম্পর্কের অনুভূতি লাভ এবং সার্বক্ষনিক স্মরন।
গ) নিজ অবস্থায় আত্নসমালোচনা ;সম্পর্কের মান/ দাবী।
২. বাস্তব কাজের পন্থা:
ক) সঠিক পথে চলার তীব্র আকাক্ষা।
খ) নিজের আকর্ষনের মান পর্যালোচনা, অভাব দেখা মাত্র পূরনের চেষ্টা করা।
গ) অসৎ সঙ্গ পরিত্যাগ করে সৎ সঙ্গ লাভ।
ঘ) নিজের চেষ্টা ব্যতিত গুনের হ্রাস বৃদ্ধি সম্ভব নয়।


আল্লাহর সাথে সম্পর্কের বিকাশ সাধনের উপকরণ:

 

১. সালাত
২. আল্লাহর যিকর
৩. সাওম
৪. আল্লাহর পথে অর্থ খরচ করা


আল্লাহ তায়ালার সাথে সম্পর্ক যাচাই করার উপায়:


স্বপ্নযোগে অথবা কাশফ,কারামত যাহির করার প্রয়োজন নেই, অন্তরই যথেষ্ট। যা বিশ্লেষন করতে হবে:


১. আল্লাহর সাথে কৃত চুক্তি পূরন করা।
২. আল্লাহর দেয়া আমানত রক্ষা করা
৩. নিজের স্বার্থে আঘাত লাগলে কেমন লাগে?
৪.খোদাদ্রোহীদের তৎপরতা কতটুকু যাতনা সৃষ্টি করে?


বড় কারামত:


১. চরম জাহেলিয়াতের মধ্যে অবস্থান করে তাওহীদের নিগুঢ় তত্ব অনুধাবন, অনুধাবন এটাই কারামত।
২. আল্লাহর পথে অটল থাকাই মুমিনের জন্য সাফল্যের সংবাদ।


আখেরাতকে অগ্রাধিকার দান: একমাত্র আখেরাতের সাফল্য আমাদের লক্ষ্য। আখেরাতের চিন্তার লালন: সার্বক্ষনিক অনুভূতির পন্থা -২টি।


১. চিন্তা ও আদর্শমূলক:
ক) অর্থবুঝে কালামে পাক অধ্যয়ন:
# কুরআনের প্রতি পৃষ্ঠায় আখেরাত।
# আখেরাতের বিস্তারিত বিবরণ।
# স্থায়ী বাসভূমির জন্য অস্থায়ী বাসভূমিতে প্রস্তুতি গ্রহন।
খ) হাদীস অধ্যয়ন ও অনুধাবন:
# কুরআনের বিস্তারিত রুপ।
# রাসুল সা: কে জানার উপায়।
# রাসুল সা: ও সাহাবীদের ত্যাগ স্মরন
গ) কবর জিয়ারত: মৃতু্কে স্মরন।

পারস্পরিক সংশোধন ও এর পন্থা:


পারস্পরিক সমালোচনার সঠিক পন্থা:

 

সকল স্থানে ও সকল সময়ে আলোচনা করা চলবে না বরং বিশেষ বৈঠকে আমীরে জামায়াতের প্রস্তাব কিংবা অনুমতিক্রমেই তা করা যেতে পারে। সমালোচনাকারী সর্বপ্রথম আল্লাহ তায়ালাকে হাযির-নাযির জেনে নিজের মনের অবস্থা সম্পর্কে বিচার-বিবেচনা করে দেখবেন যে, তিনি সততা ও শুভাকাংক্ষীর বশবর্তী হয়েই সমালোচনা করছেন, না কোন ব্যক্তিগত স্বার্থ এর মূলে সক্রিয় রয়েছে। প্রথমোক্ত অবস্থায় নি:সন্দেহে সমালোচনা করা যেতে পারে, অন্যথায় কোন প্রকার উচ্চবাচ্য না করে নিজের অন্তর হতে এ কালিমা রেখা দূর করার জন্য তার সচেষ্ট হওয়া উচিত।


সমালোচনার ভঙ্গী ও ভাষা এমন হওয়া উচিত, যা শুনে প্রত্যেকেই বুঝতে পারবে যে, আপনি সত্যই সংশোধনের বাসনা পোষণ করছেন। সমালোচনার উদ্দেশ্যে কথা বলার পূর্বে আপনার অভিযোগের সমর্থনে কোন বাস্তব প্রমাণ আছে কিনা, তা অবশ্যই ভেবে দেখবেন। অহেতুক কারো বিরুদ্ধে কথা বলা অত্যন্ত কঠিন গুনাহ, এর ফলে সামাজিক জীবনে বিশৃংখলা দেখা দেয়। যে ব্যক্তির সমালোচনা করা হবে, তার অত্যন্ত ধৈর্য্য সহকারে সমালোচকের বক্তব্য শ্রবণ করা এবং সততার সাথে তা ভেবে দেখা কর্তব্য। অভিযোগের যে অংশ সত্য, তা অকপটে স্বীকার করা এবং যে অংশ সত্য নয় তা যুক্তি-প্রমাণ দ্বারা খন্ডন করা উচিত। সমালোচনা শুনে রাগান্বিত হওয়া অহংকার ও আত্মম্ভরিতার লক্ষণ।


সমালোচনা এবং এর জবাবের ধারা সীমাহীনভাবে চলা উচিত নয়, কোন এতে একটি স্থায়ী বিরোধ ও কথা কাটাকাটির সূত্রপাত হতে পারে। আলোচনা শুধু উভয় পক্ষের বক্তব্য সুস্পষ্ট না হওয়া পর্যন্তই চলতে পারে। এরপরও যদি বিষয়টির মীমাংসা না হয়, তবে আলোচনা সেখানেই স্থগিত রাখুন, যেন উভয় পক্ষ ধীরস্থীরভাবে এবং শান্ত মনে নিজেদের বক্তব্য সম্পর্কে চিন্তা-ভাবনা করতে পারে।


আনুগত্য ও নিয়ম-শৃঙ্খলা সংরক্ষণ:


জামায়াতের নেতৃবৃন্দের প্রতি উপদেশ:

ক) অহেতুক কর্তাগিরি বা প্রভুত্বের স্বাদ গ্রহন নয়। নম্র ও মধুর ব্যবহার দিয়ে কথা বলতে হবে।
খ) ব্যবহারের ক্রটি কর্মীর মনে বিদ্রোহের জম্ম দিতে পারে।
গ) একই ধারা নয়, বরং অবস্থা, সুযোগ, সামর্থ বুঝে কাজ দিতে হবে।

bottom of page